ইসলামি ইতিহাসের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুন্দর ও মহান সময় হলো, উমর বিন আব্দুল আজিজের যুগ। যে যুগে মুসলিম-সমাজ (স্বল্প সময়ের জন্য হলেও) জমিনে শাসন-পরিচালনার সর্বোচ্চ আদর্শের স্তরে পৌঁছে যেতে সক্ষম হয়। সে সময় পুরো সাম্রাজ্যে কোনো দরিদ্র ব্যক্তি ছিল না।
আবু উবাইদ তার কিতাবুল আমওয়ালে লিখেছেন,
‘ইয়াহয়া বিন সাইদ বলেন, “উমর বিন আব্দুল আজিজ আমাকে আফ্রিকায় জাকাত সংগ্রহে পাঠালেন। আমি তা জমা করে আনলাম। তখন তিনি আমাকে তা গরিবদের মাঝে বণ্টন করার আদেশ দিলেন; কিন্তু আমি গরিব খুঁজে পেলাম না। কেননা, উমর বিন আব্দুল আজিজ সকল মানুষকে ধনী বানিয়ে দিয়েছেন। তাই আমি এই সম্পদের মাধ্যমে গোলাম ক্রয় করে আজাদ করলাম।”’
উক্ত কিতাবের ৩৫৭ ও ৩৫৮ নং পৃষ্ঠায় এসেছে,
‘উমর বিন আব্দুল আজিজ ইরাকে অবস্থানকারী আব্দুল হামিদ বিন আব্দুর রহমানকে মানুষের প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদানের আদেশ দিলেন। তখন আব্দুল হামিদ লিখেন, মানুষকে প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়ার পরও বাইতুল মালে সম্পদ রয়ে গেছে। তখন তিনি তাকে যত অবিবাহিত ছেলে-মেয়ে অর্থের অভাবে বিয়ে করতে পারছে না, তাদের বিয়ে দেওয়া এবং তাদের দান করার আদেশ দিলেন। এবার তিনি লিখেন, আমি যতজনকে পেয়েছি, সবাইকে বিয়ে দিয়েছি; তবুও বাইতুল মালে অর্থ রয়ে গেছে। তখন তিনি আবারও তাকে লিখেন, দেখো, যদি কারোর ওপর জিজিয়া থাকে, তবে তার ভূমির পরিমাণ দ্বিগুণ করে দাও এবং তাকে চাষাবাদ করার জন্য সাহায্য করো। কারণ, আমরা তাদের শুধু এক বা দুই বছরের জন্য চাই না।’
উক্ত কিতাবের ৭৩৮ নং পৃষ্ঠায় এসেছে,
‘উমর বিন আব্দুল আজিজ ফরমান পাঠান, “সকল ঋণগ্রস্তের ঋণ পরিশোধ করে দাও।” তখন লাইস বিন সাইদ বলেন, “আমরা এমন একজন (ঋণগ্রস্ত) লোককে পেয়েছি, যার ঘর, সেবক, ঘোড়া ও সামগ্রী সবই আছে।” তখন উমর রহ. লিখেন, “প্রত্যেক মুসলিমের জন্য বসবাসের জন্য বাসস্থান আবশ্যক। খাদিম প্রয়োজন, যে তার কাজে সাহায্য করবে। ঘোড়া প্রয়োজন, যা দ্বারা সে শত্রুর সাথে জিহাদ করবে। তার ঘরের আসবাবপত্র থাকাও আবশ্যক। সুতরাং তার প্রয়োজন পূরণ করো, কারণ সে ঋণগ্রস্ত।”’
Add your review
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Please login to write review!
Looks like there are no reviews yet.