ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে যুগে যুগে ইসলামবিরোধী শক্তির পক্ষ হতে নানান ষড়যন্ত্র রচিত হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে মুসলিম উম্মাহকে নির্মূল করার জন্য। কিন্তু প্রতিবারই তারা ব্যর্থ হয়েছে। সম্মুখসমরে পরাজিত হয়ে ইসলামবিরোধী শক্তি যুদ্ধের কৌশল পরিবর্তন করে নতুন যুদ্ধের রূপরেখা প্রণয়ন করে; সেই যুদ্ধের নাম দেয় তারা ‘বুদ্ধিবৃত্তিক ও চিন্তাযুদ্ধ’। ‘প্রাচ্যবাদ’ সে যুদ্ধেরই সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র ও হাতিয়ার। ইংরেজিতে যাকে ‘ওরিয়েন্টালিজম’ এবং আরবিতে ‘আল-ইসতিশরাক’ বলা হয়।
প্রাচ্যবাদ আন্দোলনের মাধ্যমে পশ্চিমারা ইসলামের ভাষা-সাহিত্য, সভ্যতা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, জ্ঞানবিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে সংমিশ্রণ ও বিকৃতি ঘটিয়ে ইসলামের প্রাণশক্তিকে দুর্বল করে দিতে সচেষ্ট হয়েছে।
ক্রুসেড যুদ্ধের পর সূচিত হওয়া এই প্রাচ্যবাদ আন্দোলন মুসলিম দেশগুলোতে চলতে থাকে অত্যন্ত কার্যকরভাবে। যা দাপটের সাথে চলেছে কয়েক শতাব্দীব্যাপী। একুশ শতকে এসে প্রাচ্যবাদ ও বিশ্বায়ন একসাথে চলছে।
প্রাচ্যবাদ আন্দোলনের পেছনে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও সাম্রাজ্যবাদী উদ্দেশ্য ও চিন্তা-চেতনা ক্রিয়াশীল। বর্তমান সমাজে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ সম্পর্কিত প্রচলিত ভুল ও বিকৃত ধারণাগুলোর অধিকাংশের জন্ম এই প্রাচ্যবাদের গর্ভ থেকে। আজ প্রাচ্যবাদ ও বিশ্বায়নের আড়ালে মুসলমানদের ঈমান-আকিদা ও সভ্যতা-সংস্কৃতি সব লুণ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। মুসলিম সমাজে নাস্তিকতা ও সংশয়বাদের যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তার পেছনে ক্রিয়াশীল অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে ‘প্রাচ্যবাদ’। অথচ আমরা গভীর ঘুমে বিভোর। মুসলিম উম্মাহকে এই ঘুম থেকে জাগ্রত করাই বইটির উদ্দেশ্য।
Add your review
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Please login to write review!
Looks like there are no reviews yet.